স্মার্টওয়াচের সুবিধা এবং বৈশিষ্ট্য
স্মার্ট ওয়াচ এর সুবিধা
স্মার্ট ওয়াচ হলো একটি প্রযুক্তিগত ডিভাইস যা স্বাস্থ্য ও ফিটনেস মনিটরিং, নোটিফিকেশন সেন্টার, টাইম টেবিল, অ্যাপ্লিকেশন ইন্সটলেশন এবং আরো অনেক কিছু করে থাকে। এই ডিভাইসগুলি অধিকাংশই ব্যক্তিগত ডিজাইন এবং আধুনিক টেকনোলজির সাথে মিশে তৈরি করা হয়। স্মার্ট ওয়াচের মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা অ্যাপ্লিকেশন, মোবাইল পরিষেবা, হার্ট রেট মনিটরিং, ঘুমের মান সহ স্বাস্থ্য ও ফিটনেস মনিটরিং ফিচার সহ আসল সেবা প্রদান করে। সহজেই বলতে গেলে, স্মার্ট ওয়াচ একটি ডিজাইনের ওয়াচ, যা একটি স্মার্টফোনের মতো বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য দেয় যা ব্যবহারকারীর জন্য উপকারী এবং আনন্দদায়ক হতে পারে। যদি একটি স্মার্ট ফোন একা এ সব করতে পারে, তাহলে আপনার স্মার্টওয়াচের প্রয়োজন হবে কেন? কেন, আপনি স্মার্ট ওয়াচ কিনবেন? এই স্মার্ট ওয়াচ কি আসলে? এর সুবিধা কি এসব প্রশ্নের উত্তর আমরা আজকের লেখায় জানবো।
স্মার্ট ওয়াচ কি?
স্মার্ট ওয়াচ, প্রযুক্তির একটি নতুন উদ্ভাবন। এটি একটি কম্পিউটারাইজড হাতঘড়ি। এটির প্রতিটি মডেলের সাথে বিভিন্ন ফাংশন রয়েছে, যা ব্যবহারকারীকে নতুন এবং আর্কষণীয় কিছু সার্ভিস প্রদান করে। স্মার্টওয়াচ টাচস্ক্রিন ইন্টারফেস সরবরাহ করে। ঘড়ি, মোবাইল আমরা সবাই ব্যবহার করি। ঘড়ি যদি আপনার স্মার্ট ফোনের সাথে কানেক্টেড থাকে তখন তাকে মোবাইল ঘড়ি বা স্মার্টওয়াচ বলা হয়। স্মার্টওয়াচ হল এমন একটা জিনিস যা আমাদেরকে স্টান্ডার্ড করে তুলেছে। একটি ঘড়ির মধ্যে মোবাইল ফোনের যাবতীয় ফিচার যুক্ত করার মাধ্যমে সেটাকে আরো ইউনিক ও আকর্ষণীয় করে তোলা হয়েছে। স্মার্টওয়াচ এর মাধ্যমে সময় দেখা ছাড়াও অনেক ধরনের কাজ করে নেয়া যায়। স্মার্টওয়াচ এর প্রতিটি মডেলের সাথে বিভিন্ন ফাংশন রয়েছে, যা ব্যবহারকারীকে নতুন এবং আর্কষণীয় কিছু সার্ভিস প্রদান করে। এক কথায়, স্মার্টওয়াচকে পোর্টেবল ছোট কম্পিউটার বলা যায় ।
২০১০ এর দশকে স্মার্টওয়াচ ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। এগুলি প্রায়শই ফিটনেস ট্র্যাকার হিসাবে ব্যবহৃত হয়, এই ঘড়িগুলোকে মূলত স্পোর্টস ওয়াচ বলে। সর্বশেষ স্মার্ট ওয়াচ উদ্ভাবন করা হয়েছে ২০২০ সালে, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ঔষধ প্রশাসন নাইটওয়্যার নামে বাজারে এনেছে। এটি হৃদস্পন্দন এবং শরীরের গতিবিধি পর্যবেক্ষণের উপর ভিত্তি করে তথ্য প্রদান করে।
আধুনিক স্মার্টওয়াচ অবশ্য মোবাইল অ্যাপগুলি চালাতে পারে। গান বাজানোর জন্য বা কল পাঠাতে এবং গ্রহণ করতে আপনার মোবাইল ফোনের উপর নির্ভর না করে, আপনি আপনার কব্জিতে থাকা ঘড়িটি দিয়ে করে ফেলতে পারেন।
দ্রুত অগ্রসরমান প্রযুক্তির যুগে, স্মার্টওয়াচগুলি দ্রুত আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠেছে। এই ব্লগে, আমরা স্মার্ট ওয়াচ বিভিন্ন সুবিধা এবং বৈশিষ্ট্যগুলি তুলে ধরবো৷
স্মার্ট ওয়াচ এর বৈশিষ্ট বা মোবাইল ঘড়ি বা স্মার্টওয়াচের ব্যবহার
প্রতিটি স্মার্ট ওয়াচ অটোমেটিকভাবে তথ্য গ্রহণ, বিশ্লেষণ করে এবং ফলাফল জানিয়ে থাকে।
১. স্মার্ট ওয়াচ এর মাধ্যমে যেকোনো সময় গান শোনা যায়।
২. সেই সাথে এতে রয়েছে থার্মোমিটার,ক্যালকুলেটর ও কম্পাসের সুবিধাও। ইন্টারনেট সংযোগ থাকলে এই ফিচার গুলো ব্যবহার করা যাবে ।
৩. মোবাইল ঘড়ি ব্যবহার করার জন্য এটি নিজের স্মার্টফোনের সাথে ব্লুটুথের মাধ্যমে কানেক্ট করে নিতে হবে। মোবাইল ফোনের সাথে সংযুক্ত হওয়ার পর এর মাধ্যমে সকল ইনকামিং কল ,মেসেজ ইত্যাদি তথ্য চেক করে নিতে পারবেন ।
৪. এর মাধ্যমে জিপিএস ট্র্যাকিং ও করা যাবে।
৫. যদিও এটি একটি ঘড়ি ,তাই এর প্রাথমিক কাজ সময় দেখানো। অ্যালার্ম, স্টপওয়াচ, টাইমার ইত্যাদির কাজও করে থাকে এটি।
৬. আপনার সোশ্যাল মিডিয়া ও অন্যান্য অ্যাপ্লিকেশনের নোটিফিকেশন পেয়ে যাবেন এই স্মার্ট ওয়াচের মাধ্যমেই।
৭. ফিটনেস ট্র্যাকিংয়ের কাজও করে স্মার্টওয়াচ । তাৎক্ষণিকভাবে ব্লাড প্রেসার,হার্টবিট রেট মেপে দিতে পারে এই স্মার্টওয়াচ।
৮. যারা দীর্ঘ সময় ধরে কাজ করেন তাদেরকে এই ঘড়ি হাতে ভাইব্রেট করে জানিয়ে দিবে, আপানার এখন উঠে দাড়াতে হবে কিংবা পানি পান করতে হবে ইত্যাদি।
৯.স্মার্ট ওয়াচ এ বিভিন্ন রকমের ফিটনেস ট্র্যাকার লাগানো থাকে, যেমন–
স্লীপ মনিটরপেডোমিটার
হার্ট-রেট মনিটর
ব্লাড প্রেসার মনিটর
ফিজিক্যাল এক্টিভিটি ট্র্যাকার
স্মার্ট ওয়াচ এর প্রয়োজনীয়তা কি?
কয়েক বছর ধরেই বাড়ছে স্মার্ট ওয়াচের জনপ্রিয়তা। মানুষ জীবনকে সহজ করতেই ভালোবাসে। তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে মানুষকে তাই এমন কিছু গ্যাজেট খুঁজে যা দিয়ে খুব দ্রুত ও সহজেসে তথ্য জানতে পারে। সে কাজটি আজকাল পূরণ করছে স্মার্টফোন। কিন্তু স্মার্টফোনের পাশাপাশি স্মার্টওয়াচের জনপ্রিয়তাও বাড়তে শুরু করেছে। বাজারে বিভিন্ন মূল্যের স্মার্টওয়াচ পাওয়া যায়। সাধারণ মানুষ বিশেষত তরুণ-তরুণীদের মধ্যে এই গ্যাজেটেদের চাহিদা ব্যাপক।
১. স্মার্ট ওয়াচ হাঁটার পদক্ষেপ, হার্ট রেট, তাপমাত্রাসহ তথ্য সংগ্রহও করে। স্মার্ট ওয়াচ হৃৎস্পন্দনে সব সময় নজর রাখে।
২. স্মার্ট ওয়াচ এটি আপনাকে জানিয়ে দেবে, কত ক্যালরি খরচ করলেন। এর ফলে ওজন নিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্য থাকলে ওয়াচের সাহায্যে ক্যালরির ঘাটতি পূরণে খাবারের পরিকল্পনাও করা যায়।
৩. প্রতিদিন কত পদক্ষেপ হাঁটলেন কিংবা দৌড়ালেন, তা জানাবে এই স্মার্ট যন্ত্র।
৪. পর্যাপ্ত ঘুম আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। তা যথাযথ রুটিনে মেনে চলাও জরুরি। স্মার্ট ওয়াচেরমনিটর কম সময় ঘুমালে সেটিও জানাবে। কতটুকু ঘুম স্বাস্থ্য অনুসারে প্রয়োজন, তা-ও জানতে পারবেন।
৫. স্মার্ট ওয়াচে তাপমাত্রা নির্ণয়ের জন্য থার্মোমিটার ব্যবহার করা হয়। এই ফিচারটি অ্যাথলেটদের জন্য বেশ কার্যকর। কতটুকু ক্যালরি বার্ন হয়েছে, তার হিসাব কষতে স্মার্ট ওয়াচে ব্যবহার করা হয় অ্যালগরিদম।
৬. এর মাধ্যমে জিম করা, দৌড়ানো, পাহাড়ে ওঠা, সাইকেল চালানো ও সাঁতার কাটার সময় পরিমাপ করা যায়।
স্মার্ট ওয়াচ এর সুবিধা কি?
স্মার্টওয়াচ অনেক বেশি সুবিধা বয়ে আনে। স্মার্টওয়াচ স্মার্টফোনের মত সুবিধা সরবরাহ করে। স্মার্ট ওয়াচের কিছু সুবিধা রয়েছে। এ বিষয়ে আলোচনা করা হলো:
স্বাস্থ্য সচেতন মানুষদের ব্লাড প্রেসার, হার্টবিট,ক্যালরি বার্ণ ইত্যাদির তথ্য প্রদানের মাধ্যমে এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
স্মার্ট ওয়াচ ফিজিক্যাল এক্টিভিটি ট্র্যাকার হিসেবে ভালো কাজ করে। কারণ এতে জিপিএস ট্র্যাকিং সুবিধা রয়েছে।
মোবাইল ফোনে ফোন আসলে তা স্মার্টওয়াচের মাধ্যমেই রিসিভ করা যাবে । যা আপনার মোবাইল ফোনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।
ফিচারের তুলনায় স্মার্ট ওয়াচের দাম কম,তাই সবাই তাদের সুবিধামত কিনে নিতে পারবে। ৩ হাজার বাজেটে চাইলেই বেশ ভালো মানের একটি স্মার্টওয়াচ কিনতে পাওয়া যায়।
একটি স্মার্টওয়াচ ইন্টারনেট অ্যাক্সেস করে । এগুলি সর্বদা আপনার ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্কের মাধ্যমে ইন্টারনেটের সাথে সংযুক্ত থাকবে।
স্মার্ট ওয়াচ দ্রুত জিপিএস ট্রাকিং থাকে যা আপনাকে বর্তমান অবস্থানটি দ্রুত খুঁজে পেতে সাহায্য করবে।
শুধু একটা সিম থাকলেই আপনি স্মার্টওয়াচটিকে একটি ফোন বানিয়ে নিতে পারবেন। এতে যারা মোবাইলফোন আসক্তি কমাতে চান, তাদের সুবিধা হবে।
আজকাল এসব মোবাইল ঘড়িতে স্লিপ মনিটর থাকে । ফলে আপনি কতটুকু সময় ঘুমে ব্যয় করেছেন, তা ঠিকই জানতে পারবেন। কোনোদিন ঘুমের ব্যত্যয় হলে আপনার ঘড়িই জানিয়ে দেবে আপনাকে।
আপনার ফোন হারিয়ে গেলে ‘Find My Phone’ ফিচারের মাধ্যমে খুঁজে বের করতে পারবেন আপনার মোবাইল ফোন।
আপডেট মডেলের মোবাইল ঘড়িতে ইমারজেন্সি কল এবং ফল ডিটেকশন ফাংশন থাকে, যার মাধ্যমে আপনি কোথাও বিপদে পড়লে আপনার আত্মীয় স্বজনরা যেনো সাথে সাথে খবর পান।
অনেক স্মার্টওয়াচে স্পোর্ট অ্যাপ, উবার, হোয়াটসঅ্যাপ কাস্টমাইজড করা থাকে। ফলে নতুন করে এগুলো ডাউনলোড করতে হয় না।
স্মার্টফোনের সাথে সংযুক্ত করলেই এই ঘড়ি হ্যান্ডস-ফ্রি কল করার সুবিধে দিয়ে থাকে।
স্মার্ট ওয়াচ একটি স্বয়ং সম্পূর্ণ গ্যাজেট অর্থাৎ এই একটি যন্ত্র আপনার শরীরের খেয়াল রাখা থেকে শুরু করে বাইরের জগতের সাথে যোগাযোগসহ সমস্ত কিছুর ক্ষেত্রেই আপনাকে সহায়তা করে।
স্মার্টওয়াচ ব্যাবহারের ১২টি সুবিধা
স্মার্ট ওয়াচে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে সঠিক সময়, গতি এবং অতিরিক্ত সুবিধা দেওয়ার জন্য তৈরি করা হয়। কারণ স্মার্ট ওয়াচ যে শুধু সুবিধাজনক তা ই নয়, আজকের বিশ্বের জন্য অপরিহার্য।
১. সাশ্রয়ী মূল্যেও স্টাইল
বাজারে লাক্সারি ওয়াচ কিংবা ভালোমানের ঘড়ির দাম অনেকেরই সাধ্যের বাইরে। অথচ বিভিন্ন দামের স্মার্টওয়াচ বাজারে থাকে যেগুলো মোটামুটি অনেকেরই সাধ্যের আওতায়। ৩ হাজার টাকা বাজেটে চাইলেই বেশ ভালো মানের একটি স্মার্টওয়াচ কিনতে পাওয়া যায়। প্রায় সব স্মার্টওয়াচ মেনুফ্যাকচারারই আকর্ষণীয় ডিজাইনে তৈরি। তবে বাজেট বাড়ালে আরও ফিচারসমৃদ্ধ ওয়াচ পাবেন। আর এসব স্মার্টওয়াচ যেকোনো অনুষ্ঠান কিংবা ইভেন্টে পরে যেতে পারবেন স্বাচ্ছন্দ্যে।
২. সময় দেখায়
যেহেতু এটি একটি ওয়াচ কাজেই ডিভাইসটির প্রাথমিক কাজ সময় দেখানো। স্মার্টওয়াচগুলোতে সময় দেখানোর পাশাপাশি অসংখ্য ফিচার থাকে।
৩. বিরামহীন সংযোগ
স্মার্টওয়াচগুলির সুবিধাগুলির মধ্যে একটি হল আমাদের স্মার্টফোন এবং অন্যান্য ডিভাইসগুলির সাথে সংযোগ করা যায়। ব্লুটুথ এর মাধ্যমে এই স্মার্ট ওয়াচ গুলো আমরা আমাদের স্মার্ট ফোনের সাথে কানেক্ট করে বিজ্ঞপ্তি, কল, বার্তা, গান শুনতে দেয়। এই স্মার্ট ওয়াচ ফোনের সাথে কানেক্ট থাকার কারণে বার বার নিজের স্মার্টফোনটি ব্যবহার করার প্রয়োজন হয় না।
৪. স্বাস্থ্যসচেতনদের পার্সোনাল ট্রেইনার
স্মার্ট ওয়াচ ব্যবহারের সুবিধা হলো স্মার্টওয়াচে হার্টরেট সেন্সর, ফিজিক্যাল অ্যাক্টিভিটি ট্র্যাকারসহ অনেক কিছুই থাকে। ফলে আপনার হার্ট রেট, আপনি কতটুকু হেঁটেছেন, কতটুকু ওয়ার্ক আউট করেছেন, ক্যালরি কতটুকু ঝরিয়েছেন, তার সবই জানতে পারবেন। তবে এক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। স্মার্টওয়াচ হলেই হবে না। কারণ নিম্নমানের স্মার্টওয়াচে যে সেন্সর ব্যবহার করা হয়, তা নির্ভুল তথ্য নাও দিতে পারে। তাই কেনার আগে ভালো মানের স্মার্টওয়াচ কিনুন। স্মার্ট ওয়াচ স্বাস্থ্য এবং ফিটনেস ট্র্যাকিং করতে পারে। উন্নত সেন্সর অন্তর্ভুক্ত করে, স্মার্টওয়াচগুলি শক্তিশালী স্বাস্থ্য এবং ফিটনেস সহচর হয়ে উঠেছে। তারা সঠিকভাবে আমাদের দৈনন্দিন কার্যকলাপ ট্র্যাক করতে পারে এবং ক্যালোরি বার্ন, হার্ট রেট মনিটর, রক্তের অক্সিজেন স্তর পরিমাপ, এবং ঘুম ট্র্যাকিং ক্ষমতা রয়েছে ভালো মানের স্মার্ট ওয়াচগুলোতে।
পেডোমিটার-
এই সেন্সর হাঁটার যাবতীয় তথ্য সংরক্ষন করে। কতগুলো স্টেপ হাটলেন, এবং তাতে আপনার কত ক্যালরি ব্যায় হল, এমনকি আপনার ওজনের হিসাবে কতটা হাটা দরকার ইত্যাদি তথ্যও প্রদান করে থাকে। ফিটনেস ট্র্যাকিংয়ের সুবিধাকে স্মার্টওয়াচের ব্যাপক জনপ্রিয়তার অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়
ব্লাড প্রেসার মনিটর-
ডায়াবেটিস, ব্লাড প্রেসার স্মার্ট ওয়াচ দিয়ে আপনি মনিটর করতে পারবেন।
ফিজিক্যাল এক্টিভিটি ট্র্যাকার-
অনেক স্মার্ট ওয়াচে ফিজিক্যাল এক্টিভিটি ট্র্যাকারও থাকে।
হার্ট-রেট মনিটর-
এখন প্রায় সকল ডিভাইসেই পাওয়া যায়। সাধারনত যারা পেশাগতভাবে খেলাধুলার সাথে যুক্ত আছেন তাদের জন্য এই অ্যাপটি অনেক গুরুত্বপূর্ন।
স্লীপ মনিটর-
সুস্থ থাকার জন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত ঘুম। তাই অনেক স্মার্ট ওয়াচেই এখন স্লীপ মনিটর ফিচারটি থাকে। এটি আপনার প্রতিদিনের ঘুমের রেকর্ড সংরক্ষন করা সহ অন্যান্য সুবিধা প্রদান করে।
৫. এপপ্সের ব্যবহার
স্মার্টওয়াচের জন্য বিশেষভাবে অনেক অ্যাপ তৈরি করেছে। উত্পাদনশীলতা সরঞ্জাম এবং আবহাওয়ার পূর্বাভাস থেকে শুরু করে সং স্ট্রিমিং এবং গেমিং পর্যন্ত, এই অ্যাপগুলি এই জিনিসগুলির উপযোগিতা বাড়ায় এবং এগুলিকে শুধুমাত্র একটি টাইমকিপিং ডিভাইসের চেয়েও বেশি করে তোলে৷
৬. এ্যালার্ট ও নোটিফিকেশন সুবিধা
ধরুন আপনি খুব ভীড়ের ভেতর আছেন যেখানে আপনার মোবাইল ফোনটি ব্যবহার করা কঠিন সেখানে স্মার্ট ওয়াচ আপনাকে আপনার ফোনের সব তথ্যই সরবরাহ করবে। স্মার্ট ওয়াচ ব্যবহারের সুবিধা, এই ডিভাইসটি যে ফোনের সাথে সংযোগ করা থাকবে সেই ফোনের নোটিফিকেশন দেখা যাবে।
৭. ভার্চুয়াল সহকারী এবং ভয়েস কন্ট্রোল
স্মার্টওয়াচগুলি ভয়েস নিয়ন্ত্রণ অফার করে, ব্যবহারকারীরা অনুস্মারক সেট করতে, বার্তা পাঠাতে, কল শুরু করতে এবং অন্যান্য বিভিন্ন কাজ সম্পাদন করে।
৮. মোবাইলের ব্যবহার কমাতে
স্মার্ট ওয়াচ ব্যবহারের সুবিধা হলো এটি মোবাইলের ব্যবহার একটু হলেও কমিয়ে দিতে পারে। ব্যস্ততায় কিংবা প্রয়োজনেই আমাদের মোবাইলফোন ব্যবহার করতেই হয়। কিন্তু মোবাইলফোন ব্যবহার সবসময় করা সম্ভব হয় না। মনে করুন আপনি জিমে ওয়ার্ক আউট করছেন, এসময় কোনো জরুরি কল এলো। সেটা বুঝবেনই বা কিভাবে ফোন হাতে না নিয়ে? অথবা আপনি বাসের ভিড়ে আটকে আছেন কিংবা রাস্তা পার হচ্ছেন। পকেট থেকে মোবাইল বের করে তা দেখার ঝুট-ঝামেলা অনেক। সেক্ষেত্রে স্মার্টওয়াচ একটি ভালো উপায় হতে পারে। বিভিন্ন দাম অনুযায়ী স্মার্টফোন নতুন সব ফিচার নিয়ে আসে। স্মার্টফোনগুলো মোবাইলফোনের সঙ্গে সংযুক্ত করে নেওয়া যায়। এতে আপনার ফোনের নোটিফিকেশন, কললিস্ট, মেসেজ, সামাজিক মাধ্যমের নোটিফিকেশন সবই দেখতে পাবেন। আবার গান শোনার সময় গান বদলাতে হলেও স্মার্টওয়াচ দিয়েই করতে পারবেন সহজে। এতে আপনার মোবাইলফোনের ব্যবহার কিছুটা হলেও কমবে।
৯. জিপিএস ট্র্যাকিং
স্মার্ট ওয়াচ দ্রুত জিপিএস সংকেত পায়, যা আপনাকে বর্তমান অবস্থানটি দ্রুত খুঁজে পেতে সাহায্য করবে। অধিকাংশ স্মার্ট ওয়াচ এ জিপিএস ট্র্যাকার থাকে। ফলে স্মার্টওয়াচ থেকেই এখন সহজে অচেনা পথকে চেনা বানিয়ে নিতে পারবেন। সেজন্যে আর ঘন ঘন ফোন বের করে গুগল ম্যাপ দেখতে হবে না। শুধু স্মার্টওয়াচে সোয়াইপ আর টাচ করলেই হয়ে যাচ্ছে।
১০. নেভিগেশন সাপোর্ট
প্রায় সব মডেলের স্মার্ট ওয়াচেই ইনবিল্ট নেভিগেশন ফিচারটি এখন থাকে।, স্মার্ট ওয়াচ ভাইব্রেশনের মাধ্যমে সঠিক দিক নির্দেশ করে। আপনি ফোন হারিয়ে ফেলেন তবে এর ফাইন্ড মাই ফোন এবং কী ফাইন্ডার ফিচার দিয়ে সহজেই খুঁজে নিতে পারবেন।
হঠাৎ করেই ফোন খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। প্রচণ্ড আতঙ্ক নিয়ে আপনি চারপাশে খুঁজে বেড়াচ্ছেন। সেক্ষেত্রে স্মার্টওয়াচ কাজে আসে। ফোনের সঙ্গে স্মার্টওয়াচ সংযুক্ত থাকলে ‘Find My Phone’ ফিচারের মাধ্যমে কয়েক সেকেন্ডেই খুঁজে বের করুন আপনার মোবাইল।
১১. কলিং এবং মেসেজিং এর সুবিধা
প্রায় সব মডেলেই স্মার্ট ওয়াচে কলিং এবং মেসেজিং এর সুবিধা এখন পাওয়া যায়। আপনি যখনই আপনার স্মার্টফোনের সাথে স্মার্ট ওয়াচ কানেক্ট করবেন, আপনার ফোনে আসা কল রিসিভ করতে অথবা কাউকে কল দিতে পারবেন। এমনকি ম্যাসেজও করতে পারবেন। এখানেই শেষ নয়, স্মার্ট ওয়াচ দিয়ে আপনি পছন্দের গান শুনতে পারবেন।
১২. স্মার্টফোনের বদলে স্মার্টওয়াচ
স্মার্টওয়াচ পুরোপুরি স্মার্টফোনকে টেক্কা দেবে এমন নয় তবে স্মার্টফোনের সাধারণ ফিচারগুলো কিছু কিছু স্মার্টওয়াচও নিয়ে আসে। শুধু একটা সিম থাকলেই আপনি স্মার্টওয়াচটিকে একটি ফোন বানিয়ে নিতে পারবেন। হ্যাঁ, আপনাকে ফোনের সঙ্গে সংযুক্ত করতে হবে না। এতে যারা মোবাইলফোন আসক্তি কমাতে চান, তাদের সুবিধা হবে। আপনি এসব স্মার্টওয়াচ থেকেই ব্রাউজ, ইমেজ দেখা, কল করা ও রিসিভ করা, সব সুবিধাই পাবেন।
স্মার্ট ওয়াচ কেন ব্যবহার করবেন?
স্মার্ট ওয়াচ এ সময় দেখার পাশাপাশি পাচ্ছেন বিভিন্ন ডিজিটাল ফিচারস। মোবাইল নেটওয়ার্ক, ক্যামেরা, কলিং, অ্যান্ড্রয়েড ফিচার সহ আছে আরও বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা। আধুনিক ফ্যাশনের যুগে স্মার্ট ঘড়ির চাহিদা যেন দিন দিন বেড়েই যাচ্ছে। চলুন জেনে নেয়া যাক স্মার্ট ঘড়ির কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ ফিচার সম্পর্কে-
১. টাচস্ক্রীন
স্মার্ট স্মার্ট ওয়াচ কনট্রোল করা যায় টাচস্ক্রীন সেন্সর এর মাধ্যমে। স্ক্রিনে টাচ করে সময় দেখতে পারবেন। টাচস্ক্রীন সেন্সরের মাধ্যমে কল কনট্রোলিং, মেসেজিং, এবং ম্যানেজমেন্ট সহ সব ধরনের কাজ করতে পারবেন।
২. অডিও কলিং
বেশিরভাগ স্মার্ট ফোনেই সিমকার্ড সাপোর্ট করে। ফলে অডিও কলিং এর সুবিধা পাওয়া যায়। কলিং সার্ভিস এর জন্য একটি মাউথ স্পিকার ও একটি কল স্পিকার তো থাকছেই।
৩. ক্যামেরা সেটআপ
বেশিরভাগ স্মার্ট ওয়াচে ক্যামেরা সেটআপ থাকে। চাইলে যে কোনো সময় হাতের ঘড়িটির মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ছবি তুলতে পারবেন। মোবাইল স্টোরেজে সেই ছবি সেভ করাও সম্ভব। আবার কোনো কোনো স্মার্ট ওয়াচে ইমেজ ইডিটিং ফাংশনও আছে।
৪. মিউজিক প্লেয়ার
স্মার্ট ওয়াচ দিয়ে গান শুনতে পারবেন, বোরিং সময়ে একটু রিল্যাক্সেশনের জন্য গান শুনতে পারবেন হাতে থাকা ঘড়ির মাধ্যমে।
৫. ওয়াটারপ্রুফ ফিচার
স্মার্ট ঘড়িটি গুলোর বেশিরভাগেরই ওয়াটারপ্রুফ ফিচার রয়েছে। সামান্য পানি বা ঘামে স্মার্ট ওয়াচ গুলো কোনো সমস্যা হয় না।
৬. তাপমাত্রা নির্ণয়কারক
স্মার্ট ঘড়িতেই তাপমাত্রা নির্ণয়ক ফিচার থাকে। তাই আপনার অতাৎক্ষণিক তাপমাত্রা নির্ণয় করতে পারবেন।
স্মার্ট ওয়াচ সম্পর্কে কিছু প্রশ্নাবলী
১. স্মার্টওয়াচ কিভাবে কাজ করে?
উত্তর: সব ধরনের স্মার্ট ঘড়িতে একটি অপারেটিং সিস্টেম থাকে ৷ এই সব স্মার্ট ঘড়ি সাধারণত টাচ স্ক্রিন । এই স্মার্টওয়াচগুলো আমাদের স্মার্ট ফোনের মতোই কাজ করে । স্ক্রিনের মাধ্যমে ঘড়িকে নির্দেশনা দেয়, যা ঘড়ির অপারেটিং সিস্টেম দ্বারা কার্যকর করা হয় ।
২. স্মার্টওয়াচ কিভাবে ব্যবহার করবেন ?
উত্তর: স্মার্টওয়াচটিকে ফোনের সাথে কানেক্ট করার জন্য, গুগল প্লে-স্টোর থেকে আপনার স্মার্টওয়াচের জন্য অ্যাপটি ইনস্টল করতে হবে । আপনার স্মার্ট ওয়াচের জন্য কোন অ্যাপটি ডাউনলোড করতে হবে, তা আপনি স্মার্টওয়াচের ইউজার ম্যানুয়াল থেকে জানতে পারবেন । আপনাকে অ্যাপের মাধ্যমে স্মার্টওয়াচটিকে ফোনের সাথে কানেক্ট করতে হবে ।
যেকোন স্মার্টওয়াচ ব্যবহার করা খুবই সহজ, কারণ এর UI (ইউজার ইন্টারফেস) অনেকটা মোবাইলের মত । তাই আপনি, ফোন ব্যবহার করার মতো করে স্মার্টওয়াচটিও ব্যবহার করতে পারবেন ।
আপনি যদি স্মার্টওয়াচ অপারেট করতে না জানেন বা স্মার্টওয়াচ অপারেট করতে কোন সমস্যা হয়, তাহলে ইউটিউবে আপনার স্মার্টওয়াচের ব্র্যান্ডের নাম লিখে সার্চ করুন । তাহলে আপনি সেই স্মার্টওয়াচ রিলেটেড ভিডিও পাবেন এবং সেগুলো দেখে আপনি খুব সহজেই আপনার স্মার্টওয়াচ অপারেট করতে পারবেন ।
৩. স্মার্ট ওয়াচ গুলোতে কত ঘন্টা চার্জ থাকতে পারে?
উত্তর: স্মার্ট ওয়াচ কোম্পানিগুলো তারা নিজে থেকে claim করে তাদের স্মার্টওয়াচের ব্যাটারি চার্জ সার্ভিস সর্বনিম্ন ১০ দিন তবে আমি আমি নিজে এই স্মার্ট ওয়াচ গুলো ব্যবহার করি এবং ব্যবহার করার ফলে দেখি এগুলোর চার্জ সর্বনিম্ন ৭-৮ দিন থাকে কখনো কখনো বেশি ব্যবহার করলে ৬ দিন চলে। তবে ১০ দিনের বেশি চলে না এটা আমার পার্সোনাল অভিজ্ঞতা থেকে বললাম।
৪. স্মার্টওয়াচ কেনার আগে কোন বিষয়গুলো মাথায় রাখা উচিত?
উত্তর: বর্তমানে বাজারে অনেক ধরণের স্মার্টওয়াচ রয়েছে এবং সেগুলির বিভিন্ন ধরনের বৈশিষ্ট্য রয়েছে । এমন অবস্থায়, ভালো স্মার্টওয়াচ বেছে নেওয়া অনেক কঠিন হয়ে পড়ে । আপনার এই সমস্যা দূর করতে, স্মার্টওয়াচ কেনার আগে কিছু বিষয় জানা প্রয়োজন যা আপনাদের সঠিক স্মার্টওয়াচ বেছে নিতে সহায়তা করবে-
ব্যাটারি লাইফ
কার্যকারিতা
ওয়াটার প্রুফ
স্মার্টফোনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ কি না
ডিজাইন ও লুক
ডিসপ্লে
উপসংহার
স্মার্টওয়াচ হল বর্তমান সময়ের একটি প্রয়োজনীয় গ্যাজেট, যা আপনার দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গী হতে পারে । স্মার্টওয়াচের সাহায্যে আপনি আপনার ফোনে যে কাজগুলি করেন, তার অনেক কিছুই করতে পারবেন ৷ আমরা আশা করছি, আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনারা, স্মার্টওয়াচ কী এবং স্মার্ট ওয়াচের সুবিধা কি তা বুঝতে পেরেছেন । এছাড়াও আমরা, স্মার্টওয়াচের বৈশিষ্ট্য এবং স্মার্টওয়াচ কেনার আগে কোন কোন বিষয় মাথায় রাখা দরকার সে বিষয়ে আপনাদের জানানোর চেষ্টা করেছি ।