কিভাবে স্মার্ট ঘড়ি ফোনের সাথে কানেক্ট করবেন? চলুন জেনে নিই

 প্রকাশ: ০২ জুন ২০২৪, ০২:৪৫ অপরাহ্ন   |   স্মার্ট ওয়াচ , টিপস ও গাইড

কিভাবে স্মার্ট ঘড়ি ফোনের সাথে কানেক্ট করবেন? চলুন জেনে নিই

আমাদের মধ্যে অনেকেই স্মার্ট ঘড়ি নতুন ব্যবহার করি এবং জানিনা কিভাবে আমাদের স্মার্ট ঘড়ি মোবাইলের সাথে কানেক্ট করতে হয়। তো আপনাদের মধ্যে যারা নতুন স্মার্টওয়াচ ব্যবহারকারী তাদেরকে আজ আমি জানাবো কিভাবে আপনার মোবাইলের সাথে আপনার স্মার্ট ঘড়িটি কানেক্ট করতে হয় সেই ব্যাপারে।

স্মার্টওয়াচের দাম জানতে ক্লিক করুন এবং এখনই ক্রয় করুন।


তাই আপনি যদি একজন নতুন স্মার্ট ঘড়ি ব্যবহারকারী হয়ে থাকেন এবং আপনার স্মার্ট ওয়াচ টিকে মোবাইলের সাথে কিভাবে কানেক্ট করতে হয় সেই বিষয়ে না জেনে থাকেন। তাহলে এই পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়ার আমন্ত্রণ রইল। কারণ এই পোস্টটি আপনি যদি সম্পূর্ণ পড়েন তাহলে এখনই জেনে নিতে পারবেন কিভাবে আপনি আপনার যে কোন স্মার্ট ঘড়ি কে মোবাইলের সাথে কানেক্ট করতে পারবেন সেই বিষয়ে। কারণ আমি প্রায় সময় দেখে থাকি আমার আমার ফ্রেন্ড সার্কেলরা তারা আমাকে এই ধরনের প্রশ্ন করে থাকেন। তাই এই এই পোস্টটি বিশেষ করে তাদের জন্যই লেখা। আপনি এটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন আশা করি আপনিও ভীষণ উপকার পাবেন‌।


Example Image

স্মার্ট ঘড়ি মোবাইলের সাথে সংযুক্ত করার পদ্ধতি

স্মার্ট ওয়াচকে মোবাইলের সাথে সংযুক্ত করা বেশ সহজ, কিন্তু এর জন্য আপনাকে কিছু সহজ ধাপ ধাপ অনুসরণ করতে হবে। আমি নিচে ধাপে ধাপে পদ্ধতিটি তুলে ধরলাম: আপনারা এগুলো অনুসরণ করে খুব সহজেই আপনার মোবাইলের সাথে আপনার স্মার্ট ওয়াচ টি কানেক্ট করতে পারবেন।


প্রথমেই স্মার্ট ঘড়ি চালু করুন: আপনার স্মার্ট ওয়াচটি চালু করুন। চালু করার পর, সেটিংস মেনুতে যান এবং "QR কোড" অপশনটি খুঁজুন। এই অপশনটিতে ক্লিক করুন এবং ক্লিক করার সাথে সাথেই আপনার স্মার্ট ঘড়ির স্ক্রিনে একটি QR কোড প্রদর্শিত হবে।


ওই QR কোড স্ক্যান করুন: মোবাইল ফোনে একটি QR কোড স্ক্যানার অ্যাপ ব্যবহার করে, স্মার্ট ওয়াচের স্ক্রিনে থাকা QR কোডটি স্ক্যান করুন। QR কোড স্ক্যান করার পর, একটি লিঙ্ক অথবা "Go to Website" নামে একটি অপশন দেখতে পাবেন। সেটিতে ক্লিক করুন।


এবার অ্যাপ ডাউনলোড করুন: লিঙ্কে ক্লিক করলে, আপনাকে স্মার্ট ওয়াচের সাথে সংশ্লিষ্ট অফিশিয়াল অ্যাপ্লিকেশনটি ডাউনলোড করার জন্য প্লে স্টোরে নিয়ে যাওয়া হবে। প্লে স্টোর থেকে অ্যাপ্লিকেশনটি ডাউনলোড করুন এবং ইনস্টল করুন।


ডাউনলোড হয়ে গেলে অ্যাপ্লিকেশনটি চালু করুন: অ্যাপ্লিকেশনটি ডাউনলোড হয়ে গেলে, সেটি খুলুন। অ্যাপটি চালু করার পর, এটি আপনার থেকে কিছু পারমিশন চাইবে। এই পারমিশনগুলোকে অনুমোদন দিন এবং আপনার মোবাইলের ব্লুটুথটি চালু করুন।


তারপর মাই ডিভাইস অপশনে প্রবেশ করুন: অ্যাপ্লিকেশনের ড্যাশবোর্ডে "My Device" অপশনটিতে যান। এরপর, "My Device" এর মধ্যে থাকা বার কোডটি স্ক্যান করুন অথবা ব্লুটুথ সার্চের মাধ্যমে স্মার্ট ওয়াচটি খুঁজে বের করুন। আমি ব্লুটুথ সার্চ পদ্ধতি ব্যবহার করার পরামর্শ দেব।


ব্লুটুথ সার্চ এবং পেয়ারিং করুন: ব্লুটুথ সার্চ করার পর আপনার স্মার্ট ওয়াচের নাম চলে আসবে। নামটির ওপর ক্লিক করুন এবং "Pair" বাটনে ক্লিক করুন। Pair বাটনে ক্লিক করলে, স্মার্ট ওয়াচটি আপনার মোবাইলের সাথে কানেক্টেড হয়ে যাবে। কিছু ক্ষেত্রে, স্মার্ট ওয়াচ থেকে পারমিশন দিতে হতে পারে, সেগুলোও অবশ্যই দিয়ে দিবেন।


স্মার্ট ঘড়িতে ওয়াচ ফেস পরিবর্তন করবেন কিভাবে?

স্মার্ট ওয়াচের ওয়াচ ফেস পরিবর্তন করতে চাইলে নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করতে পারেন:


ওয়াচ ফেস পরিবর্তন (মূল পদ্ধতি): স্মার্ট ওয়াচের স্ক্রিনে ৫-১০ সেকেন্ড আঙুল চেপে রাখুন। কিছু ওয়াচ ফেস ডিজাইন আপনার স্ক্রিনে ভেসে উঠবে। এর মধ্যে থেকে আপনার পছন্দের ডিজাইনটি নির্বাচন করুন এবং সেটির উপর টাচ করুন। এবং দেখবেন সাথে সাথেই এটি আপনার স্মার্ট ওয়াচে সেট হয়ে যাবে।


অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে ওয়াচ ফেস পরিবর্তন: যদি আপনি আরো আলাদা আলাদা ওয়াচ ফেস ব্যবহার করতে চান, তাহলে স্মার্ট ওয়াচের অ্যাপ্লিকেশনটি খুলুন। "My Device" অপশনে যান এবং "Watchfaces" অপশনে প্রবেশ করুন। পছন্দের ওয়াচ ফেস নির্বাচন করে "Upload" বাটনে ক্লিক করুন। 


ওয়াচ ফেস পরিবর্তনের সময় নিশ্চিত করুন যে, স্মার্ট ওয়াচটি মোবাইলের সাথে কানেক্টেড আছে। কারণ কানেক্টেড না থাকলে ওয়াচ ফেস পরিবর্তন করা সম্ভব হবে না। তো এই ধাপগুলো অনুসরণ করে আপনি সহজেই আপনার স্মার্ট ঘড়ি কে মোবাইলের সাথে কানেক্ট করতে পারবেন এবং ওয়াচ ফেস পরিবর্তন করতে পারবেন।

স্মার্ট ঘড়ি মোবাইলের সাথে কানেক্ট করতে গেলে ইন্টারনেট এর প্রয়জন আছে কি?

আপনার স্মার্ট ওয়াচটি মোবাইলের সাথে সংযুক্ত করতে চাইলে, ইন্টারনেট কানেকশন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটি শুধু অ্যাপ ডাউনলোড এবং ইনস্টলেশনের জন্য নয়, বরং প্রাথমিক সেটআপ, আপডেট, এবং সিঙ্কের জন্যও প্রয়োজন। তাই, নিশ্চিত করুন যে আপনার মোবাইল ফোনে সক্রিয় ইন্টারনেট সংযোগ রয়েছে, যাতে স্মার্ট ওয়াচের সব ফিচার সঠিকভাবে ব্যবহার করতে পারেন। ইন্টারনেট কানেকশন থাকলে স্মার্ট ওয়াচের সব সুবিধা উপভোগ করতে পারবেন এবং এটি ব্যবহারও সহজতর হবে।

একবার স্মার্ট ঘড়ি মোবাইলের সাথে কানেক্ট করলে কতক্ষণ কানেক্ট থাকে?

স্মার্টওয়াচ একবার মোবাইলের সাথে সংযুক্ত করলে কতক্ষণ সংযুক্ত থাকে তা নিয়ে অনেকেরই প্রশ্ন থাকে। আসুন বিষয়টি বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করি। আপনি যখন আপনার স্মার্টওয়াচটি মোবাইলের সাথে একবার সংযুক্ত করেন, সেটি স্থায়ীভাবে সংযুক্ত থাকবে। এটি মানে, যতক্ষণ পর্যন্ত আপনি নিজে থেকে কানেকশন বিচ্ছিন্ন না করেন, স্মার্টওয়াচ এবং মোবাইল একে অপরের সাথে সংযুক্ত থাকবে। 


তবে, ব্লুটুথ কানেকশনের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো এর কার্যক্ষম রেঞ্জ। সাধারণত, ব্লুটুথের কার্যক্ষম রেঞ্জ ১০ মিটার (৩০ ফুট) পর্যন্ত হতে পারে। আপনি যদি এই রেঞ্জের বাইরে চলে যান, তবে কানেকশনটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। কানেকশন বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলেও, চিন্তার কিছু নেই। আপনি যখন পুনরায় মোবাইলের কার্যক্ষম রেঞ্জে চলে আসবেন, স্মার্টওয়াচটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে মোবাইলের সাথে পুনরায় সংযুক্ত হয়ে যাবে। আপনাকে নতুন করে কোন সেটআপ বা কানেক্ট করার প্রয়োজন হবে না।


একবার সংযুক্ত হলে, স্মার্টওয়াচটি সারাজীবন আপনার মোবাইলের সাথে সংযুক্ত থাকতে সক্ষম। শুধু ব্লুটুথ রেঞ্জে থাকতে হবে এবং ব্যাটারি সচল থাকতে হবে। এটি আপনার প্রতিদিনের জীবনে একটি নিরবিচ্ছিন্ন সংযোগ নিশ্চিত করবে, যা আপনাকে প্রতিদিনের তথ্য এবং নোটিফিকেশন সহজেই পেতে সহায়তা করবে।

কেমন দামে কোন কোন কোম্পানির স্মার্ট ঘড়ি গুলো ভালো হয়? 

স্মার্টওয়াচ বা স্মার্ট ঘড়ি কেনার সময় অনেকেই ভাবেন, কোন দামের স্মার্টওয়াচ ভালো হবে এবং দীর্ঘস্থায়ী হবে। এখানে কিছু পরামর্শ দেওয়া হলো যা আপনার স্মার্টওয়াচ কেনার সিদ্ধান্তকে সহজ করে তুলবে।


দামের পরিসীমা এবং মান

আপনি যদি একটি ভালো মানের স্মার্টওয়াচ কিনতে চান, তবে ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকার বেশি মূল্যের স্মার্টওয়াচ কেনার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এই দামের মধ্যে পাওয়া স্মার্টওয়াচগুলো সাধারণত উচ্চ মানের এবং ব্র্যান্ডেড কোম্পানির হয়ে থাকে। 


ব্র্যান্ডেড স্মার্ট ঘড়ির সুবিধা:

ব্র্যান্ডেড স্মার্টওয়াচগুলোর বিশেষ কিছু সুবিধা রয়েছে যা সেগুলোকে বাজারের অন্যান্য সাধারণ স্মার্টওয়াচ থেকে আলাদা করে, সে কি সেই বিশেষ সুবিধা গুলো চলুন জেনে নেওয়া যাক:


  • টেকসই এবং দীর্ঘস্থায়ী: ব্র্যান্ডেড স্মার্টওয়াচগুলো সাধারণত উচ্চ মানের উপকরণ দিয়ে তৈরি হয়, যা সেগুলোকে টেকসই এবং দীর্ঘস্থায়ী করে।


  • সঠিক কার্যক্ষমতা: এসব স্মার্টওয়াচে বিভিন্ন সেন্সর এবং ফিচার সঠিকভাবে কাজ করে, যেমন হার্ট রেট মনিটর, স্টেপ কাউন্টার, স্লিপ ট্র্যাকিং ইত্যাদি।


  • নিয়মিত সফটওয়্যার আপডেট: ব্র্যান্ডেড স্মার্টওয়াচগুলোর সফটওয়্যার নিয়মিত আপডেট পায়, যা তাদের কার্যক্ষমতা এবং নিরাপত্তা বৃদ্ধি করে।


  • ওয়ারেন্টি এবং বিক্রয়োত্তর সেবা: ব্র্যান্ডেড কোম্পানির স্মার্টওয়াচগুলোতে সাধারণত ওয়ারেন্টি এবং বিক্রয়োত্তর সেবার সুবিধা পাওয়া যায়, যা ক্রেতার মানসিক শান্তি নিশ্চিত করে।


একটি স্মার্ট ঘড়ি কেনার সময় বিবেচনা করতে হবে যেসব বিষয়:

  • ব্যাটারি লাইফ: স্মার্ট ওয়াচ বা স্মার্ট ঘড়ি কেনার সময়, সব সময় দীর্ঘ ব্যাটারি লাইফের স্মার্টওয়াচ নির্বাচন করুন।


  • কমফোর্ট এবং ডিজাইন: এমন ডিজাইন এবং ফিচার বেছে নিন যা আপনার দৈনন্দিন জীবনের সাথে মানানসই।


  • ফিচারসমূহ: আপনার প্রয়োজন অনুযায়ী ফিচারসমৃদ্ধ স্মার্টওয়াচ বেছে নিন। যেমন, ফিটনেস ট্র্যাকিং, নোটিফিকেশন সাপোর্ট, মিউজিক কন্ট্রোল ইত্যাদি।


সংক্ষেপে বললে:

সর্বোপরি, একটি ভালো মানের এবং টেকসই স্মার্টওয়াচ কেনার জন্য ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকার বেশি খরচ করলে আপনি নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন। এই দামের মধ্যে পাওয়া স্মার্টওয়াচগুলো সাধারণত ব্র্যান্ডেড এবং দীর্ঘস্থায়ী হয়। সঠিক স্মার্টওয়াচ নির্বাচন করে আপনি আপনার দৈনন্দিন জীবনকে আরও সহজ এবং স্মার্ট করে তুলতে পারেন।

সর্বশেষ কথা: 

প্রিয় পাঠক আশা করছি আপনি আজকের এই পোস্টটি পড়ে জানতে পেরেছেন কিভাবে স্মার্ট ঘড়ি ফোনের সাথে কানেক্ট করতে হয়। এরপরও বুঝতে অসুবিধা হলে কমেন্ট করে জানাতে পারেন। পোস্টটি ভাল লাগলে শেয়ার করে দিতে পারেন। আর আপনি যদি এমনই আনকমন এবং ইন্টারেস্টিং পোস্ট করতে পছন্দ করেন তাহলে আমাদের ওয়েবসাইটের সাথেই থাকুন ধন্যবাদ।